মানুষ যখন কবি হয়ে উঠে

মানুষ যখন কিছুই হতে পারেনা তখনই সে কবি হয়ে ওঠে

খোলা বারান্দার সবুজ পাতাবাহারের মতন বৃক্ষ হবার স্বপ্নে।

কবি তো কবিই, সে কখনও দেবতা হবে না সেটা সে ভালই বোঝে।

পাতাবাহারও জানে, সে কখনও আকাশ ছোঁওয়ার ক্ষমতা রাখেনা,

তাই সে মেঘ দিয়ে কবিতা লেখে আকাশের পরে আকাশে।

আর কবি লেখে পবিত্র মন দিয়ে, পবিত্র প্যাপিরাসের ওপর।

শব্দে শব্দে, বাক্যে- অবাক্যে প্রেম ঘটে এটাও কবি ভাল বোঝে-

ভালো বোঝে শব্দ আর রঙের ঐকতান, শব্দ সুরের মিলন।

রোদ- বৃষ্টির মায়া জালে কিভাবে বীজতলা তৈরি করতে হয়

সেটাও কবি জানে সহজ সরল কৃষকের মতন।

তাহলে কৃষকও কি একজন মহৎ কবি?-

তাতো বটেই, সে বরং দিগুন কবি।

কারণ সে ঋতু ভেদে সময়ের কাজটা সময়েই করে-

আর কবি বেচারা কৃষকের সামনে অর্ধ কবি-

কারণ সে সময় চলে যাবার পরেই কবিতা লিখতে বসে!!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

২২শে জানুয়ারি, ২০১৫

অতীতকে গিলতে গিয়েও থমকে যায় মানুষ

অতীতকে গিলতে গিয়েও থমকে যায় মানুষ।

কোথাকার কোন এক খবরের কাগজ জুড়ে কেবল দুঃখ;

সে তথাস্তু পৌঁছায় কুকুরের ঘ্রাণ শক্তির প্রখরতায়।

তাই সে "গুয়ের্নিকা" আঁকার বদলে নিজেই গুয়ের্নিকা বনে যায়।

পিকাসো, মানুষের ঐ দুঃখবাদী রূপটিকে ভালো করেই চিনতো, জানতো।

তাই জীবনকে উপলব্ধি করেছেন ত্রিমাত্রিক চর্ম চক্ষু দিয়ে।

আমাদের দেখার পালা কবে শেষ হবে জানিনা।

তবে আঁকার পালা যে খুবই সীমিত,

সেটা জেনেও গিলে বসে আছি ছেলেবেলার মোমরঙ।

মাথার ভিতরে ভোঁভোঁ করছে ক্যানভাসের দল;

নারীর স্তন পেরিয়ে ফুলের তোড়া হাতে আসছে প্রেমিক;

তবে এবারকার ফুলগুলোও রসকষহীন, ঠিক ভ্যান গগের

মতো।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২

পৃথিবীটা ঘুরছে কার আশায়

জীবনকে দেখছিলাম ২০২২ সনের প্রেক্ষাপটে

যদিও মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ব্যস্ত তাদের জেম্স ওয়েব

ক্যামেরা নিয়ে।

"নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে দুই সূর্যের অক্ষে ঘুরে বেড়ানো

নতুন কোন বাসযোগ্য দুনিয়ার গল্প"

ওসব তথ্য আমার মস্তিষ্কের জন্য সুখকর।

আবার প্রশ্ন জাগে, অতীতের পৃথিবীতে কী

চোখ রাখতে পারে নে, জেম্স ওয়েব?

(যদি সে হাজার কোটি বছর পূর্বের

মহাবিশ্বের ছবি তুলে আনতে পারে)।

আমার প্রসঙ্গ সেখানে না;

আমার বিষয়, দৃষ্টিকোণের হিসেবনিকেশ।

"আমরা মানুষরা কী ঘুনেধরা, গড়পড়তা

দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিলাভ করতে পারি না?"

এই যে, মানুষ কথায় কথায় ইতিহাস নিয়ে আসে;

নিংড়ে আনে অতীতের ভবিষ্যৎ বানী।

কিন্তু কেন? নতুন কোন যুদ্ধের জন্য?

আমরা মানুষরা কী এক হতে পারি না

শুধু একটি দিনের জন্য?

বাঁচতে পারি না বৃক্ষ আর প্রাণীকুলের আলিঙ্গনে?

নাকি আমরা কেবল ক্লান্ত শ্রান্ত দেহে ঘরে ফিরব,

পকেটে এই বিল, সেই বিল ধারণ করে।

তারপর বুড়ো পৃথিবীটা বিকিয়ে দেব

কোন এক ধূর্ত বিলিয়নিয়ারের হাতে!

তারপর সেই বিলিয়নিয়ার, ট্রিলিয়নিয়ারে

রূপান্তরিত হয়ে পৃথিবীটার দিকে তাকিয়ে

গাইবে, "পৃথিবীটা ঘুরছে আমার আশায়"।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২

গিটার

বৃষ্টিতে ভিজে যে গিটার আজ যবুথবু
তবুও তার জং ধরা তারে সুর বেজে ওঠে।
স্টাফ নোটেশনের অদেখা পাতায় কিংবা
প্যাগানিনির পেশিযুক্ত সুরে, সময়ও বেঁকে বসে,
মানুষের বোধগম্যতার সীমানার বাইরে।

বিষণ্ণ বৃষ্টির ম্যারাথনে কতো বিরক্ত ছড়ায়
তোমার আমার সীমানাবিহীন আন্দিজ উপত্যকায়।
মেঝেতে জল, টেবিলে জল অথবা দেয়াল থেকে
চুইয়ে পড়া পানি, সবকিছুতেই আজ অভ্যস্ততার ছাপ,
তবুও মোম লাগানো গিটারের তারে এতো কেন সুর?

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

জুলাই ১, ২০২৪

একদিন ছেড়ে যাবে এই গৈরী বসন

আমার যা কিছু আছে সবটুকুই তোমার জন্য রেখে গেলাম।
শরীরের ভিতর পিস্টনদের অগোছালো নড়াচড়া
বুঝিয়ে দিচ্ছে এখন আর মবিল ঢেলেও তেমন লাভ হবে না।
আমার যবুথবু নড়বড়ে চেসিসটা তবুও ক্লান্তিহীন
একে, একে যুদ্ধ সামাল দিয়ে চাচ্ছে স্রেফ তোমার জন্যে।
তোমার রাগ, অনুরাগ অথবা বিরামহীন আব্দারের মাঝে
আমি খুঁজে পাই, এক অসীম ধৈর্যশীল সন্তকে
শত বাধার মাঝেও যে প্রমাদ হবে না;
অশোভন হবে না;
টলাবে না তাকে
একবিন্দু শঙ্কার ঢল।
বরং সে আরি পেতে, মৃত্যু দেবতাদের
কথোপকথন শুনতে শুনতে
একদিন ছেড়ে যাবে এই গৈরী বসন।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২

ছয়-সাত দশকের জীবন

আকাশটা যতো খোলা, মানুষের ভিতরটা ততোই দুর্গম।
মানুষ সভ্যতার কথা বলে, অথচ অসভ্যতাটা লুকিয়ে
রাখে যতো আইনি জটিলতায়।
ওদিকে নারী স্বাধীনতার তীক্ষ্ণ চিৎকারে যখন খণ্ড খণ্ডবিখণ্ড
হয়ে পড়ছে নারী পুরুষের অবিচ্ছিন্ন মহাদেশ।
তখন স্ত্রী গণ নারী মুক্তির টিকিট কেনে, স্বামী দের পকেট কেটে।
তারা শরিয়া আইনের প্রশ্ন তুলে কেবল কা বীন-নামার টাকার লোভে,
আবার সন্তানের জামিনদার হতে আবার ফিরে যায়, রোমান আইনের
জটিলতায়।
ইসলাম ও রোমান আইন, দুই পরস্পর বিরোধী সভ্যতার
বেড়াজালে আজ আটকে গেছে পুরো সমাজ।
আসলে এ জাতীয় প্রাণী দের কোন কিছুতেই বিশ্বাস নেই,
শুধু মুনাফা টা বাদে।
যেন খোলা আকাশ টার নিচে চলছে, কেবল টাকার খেলা,
অথচ এতো কিছু না করে, হাত পা গুটিয়ে রাখলে ও
মন্দ হতো না, মানুষের এই ছয়-সাত দশকের জীবন টার।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫


কোন এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে

কোন এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে বেড়িয়ে ছিলাম শূন্য হাতে । পাহাড়ি স্মৃতির পথ মারিয়ে যখন উঠে গেলাম কোর্ট-হিলে। বৃষ্টিও নামলো অঝোরে চারদিক লোকে লোকারণ্য লুকোনোর স্থানও প্রায় শূন্য। তাই পুরনো এক বন্ধুকে পেয়ে ঢুকে গেলাম তার চেম্বারে। উকিল বন্ধুর খুপরি রুমে ডজন খানেক খদ্দের গেছে আটকে। বাতাস বিহীন করিডরে হঠাৎ পুরনো এক কণ্ঠ ভেসে আসে । আর প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় চিনতে পেরেছেন এই আমাকে? আমিও ভাবতে থাকি, ভাবতে ভাবতে হঠাৎ পৌঁছে গেলাম স্মৃতির কিনারে। বললাম, তুমি জেসিকা না? কালো বোরকা থেকে একটা হাস্যজ্জল মুখের উদয় ঘটে। আর বলে চিনতে পেরেছেন তাহলে। আমিও ভাবি, মেয়েটি মনে রাখল কিভাবে? না না মেয়ে তো নয়, এক মাঝবয়সী নারী। সেই কলেজ জীবনে একবার তার সাথে গেয়েছিলাম, এসো নিপো বনে ছায়া বীথি তলে। তারপর কেটে গেল বছর ত্রিশ বছর।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২

বিকাশের টাকা

বিকাশের টাকা আসছে উড়ে
ভাবছে বসে দোকানঘরে,
চাল, ডাল আর নুন কিনতে
মানিব্যাগে রক্ত ঝরে।
বৃষ্টি নামে খেলার ছলে
কালো মেঘে আকাশ ছাপে,
দোকানঘরে ঠাই নাই তাই
পথচারীর হট্টগোলে।
দোকান মালিক প্রশ্ন করে
আর কতক্ষন অপেক্ষা তবে?
মাহমুদ মিয়া হেসে বলে
এই যে বিকাশ ঢুকল সবে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২

কে বলিবে তাকে

কে বলিবে তাকে

আমি যে এক পদ্মফুল

ভাসি কাঁদি অন্যের দুঃখে।

পার্থিব খরায় জন্মিলেও

মন যে আমার প্রদীপের মতো জ্বলে

এই তুচ্ছ দেহের ভিতরে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১

ছবি আঁকার প্রবল ইচ্ছে ও কিছু অব্যক্ত প্রলাপ

আঁকতে ইচ্ছে করে আজ বড় বেশি
ইচ্ছে করে নিজেকে ভুলে বসি
ছবির আনাচে কানাচে
আলোছায়ার অদৃশ্য জগতে।

কিন্তু সেই আঁকার সময় আর হয়ে ওঠে না
নাকি বড় বেশি দেরি হয়ে গেলো আমার
আবার রঙের রাজকুমার হয়ে দাঁড়াতে।
ওদিকে সময়ও কথা বলে যায় অনবরত
আমিও তাকে রঙ মেখে মেখে আনমনে
মুখোশ পড়িয়ে দিই...।

এভাবেই কাটবে হয়তো আরও কিছুকাল
আমি, তুমি, পৃথিবী যখন মুখোশে ঢাকা
তখন ঐ ছবি আঁকার ইচ্ছেটাও
রঙের মুখোশে হাবুডুবু খাক, আরও কিছুকাল।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

এপ্রিল ১৫, ২০১৯

বেঁচে আছি যখন হোমো-সেপিয়ানদের মাঝে পরাজিত নিয়ান্ডারথাল হয়ে

দখিনা বাতাসে আজ স্বপ্নরা ছুটে চলে
কোন এক অজানা মহাদেশে।
সেখানেও প্রকৃতি গজায়
তবে সবুজ নয় নীলাভ-বেগুনি হয়ে।
সমাধির ভিতর নিজের ভবিষ্যৎকে দেখি
এক অদ্ভুদ সুন্দর মানুষরূপে।
সেখানে সবাই হোমো-সেপিয়ান নয়
বরং দিগুণ হোমো-সেপিয়ান।
উত্তাপহীন সূর্য তবে ল্যাম্পোস্টের মতন
আলো ছড়ানোতে ব্যস্ত সারাদিন।
বারবার ঘুরিফিরি সেই জগত
ইচ্ছে করে সারাদিন সেই জগতেই ডুবে থাকি,
তবে এই জগতের তেল-নুন কে যোগাবে?
বেঁচে আছি যখন হোমো-সেপিয়ানদের মাঝে
পরাজিত নিয়ান্ডারথাল হয়ে!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

আগস্ট ১৮, ২০২০

আমাকে একা হতে দাও

আমাকে একা হতে দাও
সমুদ্রে ভাসিয়ে নাও
মাস্তুল ভেঙ্গে দাও
ডুবিয়ে দাও কাঠামো।
তারপর আমি উড়বো শুধু মুক্ত আকাশে
সমুদ্রের ফেনা হয়ে গড়িয়ে যাবো তীরে।
আমাকে একা হতে দাও
একা হওয়ার আরধ্য আনন্দ
পেতে দাও, পেতে দাও।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

মার্চ ২৮, ২০১৯

আজ আমি আকাশ হয়ে অপেক্ষারত

আজ তোমার জন্মদিন
আমার চিরন্তন উচ্ছ্বাস।
আজ আমি আকাশ হয়ে অপেক্ষারত।

এই মিষ্টি রোদ্দুরের বৃষ্টিতে
আজ আমি বাতাস হয়ে ঘুরবো
তোমার নিষিদ্ধ আঙিনায়।
আজ আমি আকাশ হয়ে অপেক্ষারত।

আজ পৃথিবীর যতো ঘৃণা,
যতো নোনা অশ্রুজল
বুনো মাটির গন্ধে একাকার হোক,
পরিণত হোক এক পৃথিবীর আদি শ্লোক।
আজ আমি আকাশ হয়ে অপেক্ষারত তোমার জন্য।

আজ আমি নির্লিপ্ত, অপ্রমত্ত
ম্লান করেছি পৃথিবীর যতো ক্ষুধা।
নিজেকে করেছি উজাড়, মৈত্রীময়
তোমার প্রেমময় পলির প্লাবনের ধারায়।
আজ আমি আকাশ হয়ে অপেক্ষারত তোমার জন্য।


কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ২০, ২০২৫

আমার অদেখা যতো সুখ

আমার অদেখা যতো সুখ
আজ অতি নিকটে।
আজ তারা কাগজের উল্টো প্রান্তে
দুঃখ হয়ে ভাসে।
আজ আমার সকল অদেখা তারা
মাথার ভিতরে ঘোরে,
মহাকাশে জন্মানোর আগেই তারা
মগজের নিউরন হয়ে ফোটে।
আজ আমার স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্ন
বালি আর সিমেন্টের মতন
মিলেমিশে একাকার।
আজ আমার জন্ম-মৃত্যু-জন্মান্তর
যেন খৈ হয়ে ফোটে
অসীম শূন্যতার ডায়নামোতে!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

মার্চ ৭, ২০১৯

সময় যখন জীবিত মানুষ তখন মৃত

সময় যখন জীবিত
মানুষ তখন মৃত।
সময় যখন চলে যায়
মানুষ তখন গল্প লেখে জীবনের;
আবার লিখতে লিখতেও চলে যায় আসল সময়।
আর বাকী যে সময় নিয়ে মানুষ গর্ব করে,
তারা আসলে সময় নয়, স্রেফ সময়ের কংকাল!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

নভেম্বর ১, ২০১৮


দুঃখ নিরন্তর

প্রতিনিয়ত ছুঁইয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর পথ
কর্ম, শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে অসময়ের ভিতর।
কলহ-বিবাদে মুখরিত যারা, তারা কি বোঝে আসল পথ?
যে বোঝে কেবল সেই বোঝে আর বোঝে এই দুঃখ নিরন্তর!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ৩০, ২০১৮

কবিতা লেখা এতো সহজ নয়

কবিতা লেখা এতো সহজ নয়।
তাই আজকে আর কবিতা হবে না।
আজ শুধু আকাশসম মন নিয়ে ছড়িয়ে যাব দিগন্তে
আর অন্যের দুঃখে দুঃখিত হয়ে বিলিয়ে দেব নিজেকে।
তাই আজ থেকে আমিই কবিতা
আর অক্ষরগুলো আমার পরমাণু।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

নভেম্বর ৫, ২০১৮

শেষ বিকেলের কাব্য

কতো বার যে কবিতা লিখেছি
এই নির্দিষ্ট সময়টা নিয়ে
তার কোন ইয়ত্তা নেই।
তবুও এই বিকেলই আমার চির বিস্ময়
আর তার নতুন কারণটা হচ্ছে,
ঠিক এই সময়টিতে আমি গুলিয়ে ফেলি
কোনটি নেমেসিসের নিবিরু গ্রহ
অথবা কোনটি সৌরজগতের পৃথিবী।
যাক, এই হাইপথিসিসটা মন্দ নয়
চিন্তার জগতে সৃষ্টি তত্ত্বের নতুন ধাপ
তোমাদের এতোসব বুড়ো ধারণার
পথ পেরিয়ে, আমি ফিরে গেছি
তারুন্যে ভরপুর মেসপটিয়ামার পথে।
আপ্লুত করে আমাকে কেন জানি
গ্রীক ফিলসফির মতই সুমেরিয়ান-
অন্টলোজি; এ হতে, এই হতে গিয়ে
অন্তত আমাদের শুকনো গলাবাজি
কিছুটা সময় না হোক গোরস্থানের
মায়াকাননের ফুল হয়ে ফুটুক।
আর আমরা যে অন্তত দাস হয়ে
পৃথিবীর বুকে বেঁচে আছি, এই
নৃশংস সত্যটা যারা বোঝে,
তাদের খুব বলতে ইচ্ছে করে,
শেষ বিকেলটা দেখে সকল সুখের
আস্বাদ গ্রহণ করো। ঠিক কার্টিজ
পেপারের মতন যাতে সুখ বিষয়টি
রক্তবর্ণে রঞ্জিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক
তোমার শিরায়, শিরায়।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

মার্চ ২৪, ২০২৯


বিকেল ঝরছে কাকপক্ষিদের সুরে সুরে

বিকেল ঝরছে কাকপক্ষিদের সুরে সুরে
হৃদয়ে জেগে ওঠে সেই রডোডেন্ড্রাম।
জুতসই শব্দগুচ্ছও আর মেলে না, একা একা,
তাই এই বিমূর্ত অনুভূতির পরিনতিও কেবল নামহীনতা।
যাক না সবকিছু, শীতের শুকনো ঘাসের মতন,
তবুও পাখিরা আসে উদাস করা দুপুরে।
ঘুড়ি উড়ে এরোপ্লেনের পিছু পিছু,
আমিও ছুটি আরও কিছু নামহীন সচেতনতার মতো,
যাদের নেই কোন পিছুটান আপাতত
অথচ হৃদয় জুড়ে কতো অমলিন দৃশ্য
ছেপে ওঠে বায়স্কোপের মতো!
শৈশবের শিল্পী হবার স্বাদ ভুলে
এখন কেবল স্বপ্নিল মাঠে বিচরণ করি।
নিষিদ্ধ খেচরের মতো, নামহীন দুঃখ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়
অচেনা গলির অচেনা এক ফ্ল্যাটের
অচেনা কোন নারীর কাব্যিকতার মাঝে।
নিজেকে বিলিয়ে দিই পরমানন্দময় শব্দগুচ্ছের মতন
আর হৃদয়ে চোখ রেখে রেখে কবি হওয়ার স্বপ্ন দেখি -
নতুন করে!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

জানুয়ারি ২৮, ২০১৯


যদি একশো বছর বাঁচি

যদি একশো বছর বাঁচি
আর সারাজীবন সুস্থদেহে
নড়াচড়া করি।
তখন এই মাঝবয়সকেই
মনে হবে
আকাশ ছোঁয়া ঘুড়ি।

যদি একশো বছর বাঁচি।
তবে ষাটে এলেই
নতুন করে
ঘর বাঁধবো বুঝি।
যদি একশো বছর বাঁচি।

যদি একশো বছর বাঁচি
তবে মেয়র হওয়ার খায়েশটা
ঝালিয়ে নিতাম বুঝি।
শহরটাকে বাড়িয়ে নিতাম,
শুঁড়ীখানা খুলে দিতাম,
প্রাইভেট গাড়ী তুলে নিয়ে
বাস-ট্রেইনে দেশ ভরিয়ে দিতাম।

যদি একশো বছর বাঁচি
আর সত্তরেতে হঠাৎ করে
প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়ে বসি!
তবে এই তেলসমাতির মন্ত্রীদের
খারিজ করতাম সর্বাগ্রে
পরিবর্তে সফটওয়্যারে
দেশ চালাতাম সানন্দে।

যদি একশো বছর বাঁচি
আর সারাজীবন সুস্থদেহে
নড়াচড়া করি।
তখন এই মাঝবয়সকেই
মনে হবে
আকাশ ছোঁয়া ঘুড়ি।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ১৮, ২০১৮


আর কতো না লিখলে তুমি কবি হয়ে উঠবে

আর কতো না লিখলে তুমি কবি হয়ে উঠবে?
আর কতো নিচে নামলে তোমাই সবাই মানুষ বলবে?
যে দিন তুমি জলের মতন গড়িয়ে যাবে সমুদ্রে,
সে দিন তুমি ফিরে যাবে তোমার আদি-স্বত্বার সান্নিধ্যে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ১৭, ২০১৮

আমি মৃত্যু চাইনি, মৃত্যুর স্বাদ চেয়েছিলাম

আমি মৃত্যু চাইনি, মৃত্যুর স্বাদ চেয়েছিলাম

অথচ তুমি আমাকে মৃত ভেবে ছেড়ে চলে গেলে।

মৃত্যু অথবা স্ব-ইচ্ছায় মৃত্যু এতো সহজ নয়,

যাদের জীবনটা নড়বড়ে কিন্তু মাথায় চির বসন্ত,

তারা কখনও নিজের জীবনকে সঁপে দেবে না সিংহের হাতে।

তারা বরং একাকীত্বের ছুরির আঘাতে আহত হবে বারবার

নিষিদ্ধ হয়ে যাবে সমাজ থেকে তবুও মৃত্যুকে বরণ করবে না

কখনো।

আমি মৃত্যু চাইনি, মৃত্যুর স্বাদ চেয়েছিলাম কেবল

অথচ তুমি আমাকে মৃত ভেবে ছেড়ে চলে গেলে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ১৬, ২০১৮

মেঘ সদৃশ জগতের ভ্রান্তি

যদি কখনও প্রশ্ন জাগে মৃত্যুর আগে
কোন এক ডানাওয়ালা ফেরেস্তার মুখ থেকে,
"ভবের জীবনটা কেমন কাটিয়েছিলে হে বৎস?"
তখন আমার পাল্টা প্রশ্ন হবে,
"কোন প্রপঞ্চের কথা বলছ তুমি হে ফেরেস্তা?"
আমি জানি তিনি প্রশ্নবানে বিদ্ধ হয়ে
হতবুদ্ধি হয়ে উড়াল দেবেন আবার অন্য প্রপঞ্চে!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম ইসলাম

অক্টোবর ১৩, ২০১৮


বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ

বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ, আর আমি হেঁটে চলছি বৈরী ফুটপাথ ধরে,
হাতল ভাঙ্গা ছাতা নিয়ে।
বৃষ্টি নামে আবার বৃষ্টি থামে, তারপর মনে মনে কথা বলা, হাঁটার সাথে হাতেহাত রাখি
অদৃশ্য তোমার সাথে।
কতদিন হল তোমার হাত ধরেছিলাম?
যদি আবার তোমার সাথে কথা হতো এই রাজপথে,
তবে বুকফুলিয়ে বলতাম আসল প্রেম চিরকালই আবছা থেকে যায়।
এ যেমন, এই শহর এতো কিছুর পরও আমাকে ভালবাসে,
এই শহরের ভাঙ্গা ফুটপাথ, বর্জ্য আমাকে কখনও আছড়ে ফেলেনি
ম্যানহলের ভিতর অথবা নরপিশাচ ট্রাক, বাস অথবা জাপানী
গাড়ীর ভিতর কিম্ভূতকিমাকার জাপানী পুতুলগণ
আমাকে কখনও ছিটকে দেয়নি জীর্ণ ফুটপাথের ওপর।
বরং আমি হেঁটে হেঁটে এই শহরের অতীতের কথা ভেবেছি,
স্কুল জীবনের উচ্ছল দিনগুলোর কথা ভেবেছি,
ভেবেছি নবম শ্রেণীর এক বিস্মিত বালকের কথা,
যার হাতে ছিল সুকান্তের ছাড়পত্র আর স্বপ্নে লাল পতাকা।

বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ, আর আমি অনবরত সাঁতরিয়ে বেড়াচ্ছি
বাস্তবতার আনাচে কানাচে।
মাস ঘুরেই জঞ্জাল, মানুষের কটূক্তি, বন্ধুত্বের আর্তনাদ।
যদিও আমি ওসবকে টেলিফোন-তারে আড়িপেতে থাকা
কিছু কাকের তরতাজা উচ্ছিষ্ট বলে বরণ করেছি।

বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ, আর আমি হেঁটে চলছি দুঃখের ফুটপাথ ধরে
অথচ দুঃখও থেমে যায় কিছুদূর হাঁটার পরে,
আমাদের এই হাঁটাহাঁটির মেলায় পায়েরতলায় কিছু সুখ জাগাই,
যার ফলশ্রুতিতে আবার গভীর ঘুমে ঢলে পড়ি নিঃসঙ্গ বেডরুমে
ঝকঝকে এলডি-বাতির মায়ায়।

বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ, আর আমি স্বপ্ন নিয়ে বসে আছি,
ভাবতে থাকি কবেকার কথা, বছর উনিশ-কুড়ি
অথবা ত্রিশবছর আগের কথা।
হেঁটে হেঁটে কতো যে মেরে এসেছি বাসি খবরের কাগজ,
অবিনশ্বর পলিথিন, আরও সংখ্যাতীত মলের ফসিল।

বৃষ্টিতে ভিজছে চাটগাঁ, আর আমি হেঁটে বেড়ায় সময়ের ভিতর
চতুর বিড়ালীর নিষ্কলঙ্কময় সাদা চাদর গায়ে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ১১, ২০১৮


দুঃখটা শুয়ে আছে যেখানে

এটাও ঠিক যে, আমি তোমাকে চিনেছি
যখন আমি পুরোপুরি প্রয়োজনহীন হয়ে উঠেছি
সমাজের কাছে।
আবার এটাও ঠিক যে, আসলে আমি
সত্যসন্ধানের পথেই তোমাকে হারিয়েছি
নিভু নিভু যৌবনের প্রান্তে।

আর দুঃখটা শুয়ে আছে
কেবল একটি দশক জুড়ে
যখন আমরা আকাশকে ছুঁইয়ে যেতে পারতাম;
সূর্যকে নামিয়ে আনতে পারতাম
নোনা জলে!
আর এই তুচ্ছ দেহটাকে
টুকরো টুকরো করে
ছুঁড়ে দিতে পারতাম গঙ্গা জলে।

তাই আজ দুঃখটা হল
কেবল সময়ের সাথে,
সম্ভবত সময়ের সাথে
মনের যোগাযোগটা
অনেক আগেই ঘটতে পারতো।
আর সুখটা হল,
এই আমি সব হারিয়ে
অন্তত সত্যপথটা চিনলাম;
মনের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে
আবার জন্মলাভ করলাম
এই নিঃসঙ্গ ধরণীতে।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

অক্টোবর ১০, ২০১৮


বাড়ন্ত দুনিয়ার বাড়ন্ত সম্ভাবনা

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

সব কথা বলা যাবেনা এক জীবনে
তাই আরেক জীবনের সম্ভাবনা বাড়ছে ধীরে ধীরে।
অথচ এই বাড়ন্ত সম্ভাবনাকে কতোভাবেই- না শাসিয়ে রেখেছে ইতিহাস!

যে- চালার নিচে বসে আমি এই বাড়ন্ত কথাগুলো লিখছি,
সেটিও হতে পারে বাড়ন্ত জীবনের আরেক ধরনের প্যাপিরেসিয় অস্তিত্ব;
যদি আমিই বাড়ন্ত হই, আমার দুঃখও বাড়ন্ত, তাহলে আমার সুখও বাড়ন্ত হতে বাধ্য।

আর শব্দের সাথে কুশলি-আলাপচারিতায় যে সাগরে পাল তুলেছি-
ভাষা ও অস্তিত্তের বাড়ন্ত সম্ভাবনায়
তাকে তুমি কি বলবে?
বাড়ন্ত দুনিয়ার বাড়ন্ত সম্ভাবনা!

০৫/১১/২০১৪

হে আমার প্রাগৈতিহাসিক অনিশ্চিত বন্ধু

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

কোথায় নিয়ে যাবে?
হে অনিশ্চিত পদযাত্রা,
নিয়ে চলো শূন্যে,
নিয়ে চলো সৌহার্দ্যে,
নিয়ে চলো অন্ধকারে,
অনর্থ যেখানে হাতছানি দেয় চিরকাল।

বৃষ্টি ভেজা নরম মাটির ঘর
দেবে যাবে জানি অনিশ্চিত পাতালপুরীতে,
পাহাড় ধসবে, পলি জমবে, হিমবাহ গড়াবে,
আরও- কত কি?

অভিশাপের কম্পনে কম্পিত নয় যার হৃদয়
তার কাছে অনিশ্চিত আকাশ,
অনিশ্চিত আকার,
অনিশ্চিত অন্ধকার
সবই নিশ্চিত
হে আমার
প্রাগৈতিহাসিক অনিশ্চিত বন্ধু!

০৬/১১/২০১৪


ভালোবাসাকে অনুভব করবে বলে

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

তুমি কি কখনো বৃষ্টি নামতে দেখেছো?
আকাশের ছায়াময় উৎসবে-
দুঃখরা যেভাবে ঝরে পড়ে অঝোর ধারায়!

তুমি কি কখনো বৃষ্টির উম্মাদনায় দুলেছ?
সহজাত নেশায়, পিতৃপরিচয়হিন উলঙ্গ শিশুর উচ্ছলতায়,
আকাশ থেকে পাওয়া পাপমোচনের সূত্র ভেবে?

তুমি কি কখনো নিজের মতো বৃষ্টিকে অনুভব করেছ?
নাগরিক দুর্ভোগের নির্মম বাস্তবতায়-
প্রকৃতি কতো প্রশান্ত, প্রশস্ত! উজাড় করে সবকিছু-
ঝাঁজরার মতো শুধু ভালোবাসাকে অনুভব করবে বলে!

০৮/১১/২০১৪

মৃত্যুর সাথে বন্ধুতা

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

মৃত্যুর সাথে বন্ধুততা
শহুরে গুহামানব!
ঘৃণা আর হিংস্রতার ছুরি
সদাই জাগ্রত জানালার কোণে
সময়ের প্রয়োজনে কেউ কেউ আসে
অসময়ের কুকুরছানারা আর আসে না।
রবাহূত বলতে কিছু পুরোনো স্মৃতি,
যাদের ওজন পৃথিবীর ভরেরও বেশী!
চল্লিশাের্ধ মানুষটার যোগাযোগ মহাকাশের সাথে-
২৪ ঘণ্টা সালোকসংশ্লেষণ চলছে অনবরত!

১২/১১/২০১৪

একদিন শুক্রবার

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

একদিন শুক্রবার
আমার একমাত্র সন্তান
বাসায় নেই, মায়ের সাথে নানার বাড়ি।
যাবার বেলায় তার আনন্দের শেষ নেই,
তাই তার ডাইনোসর, হরেক রকম প্রানি আর গাড়িঘোড়ার খেলনাগুলো
এলোমেলো করে রেখেছে পুরো ঘরের মেঝেতে।

আমি হঠাৎ অন্য মানুষ-
আবার অনুপ্রাণিত হলাম,
জানালার সূর্যের আলো আড়াআড়িভাবে ঝুঁকে,
ব্যাপারটাকে আরো সহজ করে দিলো হারিয়ে যাওয়া শিশুটিকে খুঁজতে।
এবার আমি গভীর মনোযোগে খেলায় মেতে উঠলাম-
নানারকম বন্য প্রাণীদের মাঝে আমার উইলি-জীপ খানা চলছে-
কেনিয়ার একটা বিশাল অভয়ারণ্যের ভেতর---- ।

আস্তে আস্তে রোদ হেলে পড়ে----
কলিং বেল বেজে উঠে---
আমি দরজা খুলেই বুঝলাম,
এতক্ষন ছত্রিশ বছর আগের
'টাইম-মেশিনের' ভেতরেই ছিলাম------

আমার সন্তান আমাকে শাসিয়ে বললো-
"তুমি আর কক্ষনো আমার খেলনা ধরবে না!"
তারপর আবার আমি দৈনন্দিন জগতের দুঃখের সাগরে
নিষ্পেষিত হলাম!

১৪/১১/২০১৪

কেউ-না-কেউ তোমাকে সাড়া দেবেই

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

কোথাও সুযোগ নেই?
হতাশ হওয়ার কিছু নেই,
কারণ এখনও তোমার মাথার ওপর সূর্য ওঠে।
চাঁদের আলোয় আলোকিত খোলা আকাশের নীচে হাত-পা ছড়িয়ে দাও।
দ্যাখো, তোমার আকাশে অফুরন্ত স্বর্গ, গ্যালাক্সি, আলোর পরে আলোর হাতছানি।
আর তুমি যে পৃথিবীর ঘাসের ওপর গা এলিয়ে দিয়েছ, সেখানেও আছে প্রায় দু'শর কাছাকাছি দেশ,
সাইবার বিশ্ব,
কল্পনা আর বাস্তবের মিলনমেলা,
সাতশ কোটি মানুষ!
তাদের লক্ষ লক্ষ ঘর!
দরজায় কড়া নেড়ে দ্যাখো- না?
দেখবে, কেউ-না-কেউ তোমাকে সাড়া দেবেই।

১৫/১১/২০১৪

তিনটি দশক

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

চেয়েছিলাম শুধুই আনন্দময় উপস্থিতি হতে
কিন্তু হয়ে গেলাম 'আমি'!
এই 'আমিত্ব' ঘোচাতেই কেটে গেল
তিনটি দশক!

১৬ই অক্টোবর, ২০১৩

পাণ্ডুলিপির শেষের পাতায়

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

পাণ্ডুলিপির শেষের পাতায়
আপাতত কোনো সুমাপ্তি নেই
কোনো সমাধান নেই
আত্ম উপলব্ধির জটিল প্যাঁচে
জড়িয়ে গেছে কাব্য সৃষ্টির মর্ম
হও যদি তুমি বুদ্ধিমান
ঢুকতে পারো এই “পাণ্ডু” পিরামিডের ভেতর
শব্দের সাথে আলাপচারিতায় বুঝবে
কাব্য-অকাব্যিকতায় কতো দুঃখ ছিলো
ঝড় বৃষ্টির নিঃশেষে শান্ত চাঁদের মতন
ঐ সৃষ্টিতে কতো শান্তি ঝরে
ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করো?
নয়তো তার ছোট বিবেককে
নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে জানতে পারো
কে কতো বিশুদ্ধ কবিতা লিখলো!

২০০১


প্রেমের কার্নিভাল

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

খুলে দিলাম সবকটা জানালা
নশ্বর এই দেহের,
যাতে প্রেমের কার্নিভাল উৎসবে মেতে উঠি
লজ্জাহীন, দিগম্বর হয়ে,
আর মিশে যাই
সর্বময়!

১৮/১১/২০১৪

পৃথিবীর সব রঙ ঝরে পড়ে একদিন মৃত্যুঞ্জয়ীর ঠিকানায়

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

পৃথিবীর সব রঙ ঝরে পড়ে একদিন মৃত্যুঞ্জয়ীর ঠিকানায়
পৃথিবীর সব সুখ আর কাল্পনিক দুঃখ মিলেমিশে একাকার,
বিজ্রিত-বাদ্রো, মেরেলিন-মনরো, সব ফ্যান্টাসি
অথবা ভ্যান-গগের দুঃখ মাখা অবশ্যম্ভাবী চিত্র জগত,
সবই আসলে টালমাটাল মৃত্যুঞ্জয়ী পরমানন্দময় হাওয়ায়
বাসার মূল্যবান চাবি, দামি দামি গহনা
কিচ্ছু নয় বন্ধু, মিথ্যে আশ্বাসের প্রেতাত্মা
মৃত্যুঞ্জয়ীর ধুলো মাখো বন্ধু সময় থাকতে
দেখবে তুমিও একদিন মৃত্যুঞ্জয়ী হবে
ইজেলের ওপর রঙ মাখানো ইঙ্কমপ্লিট সকালে।।

১৯/১১/২০১৪

আশাহীন মানুষ

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

আশাহীন মানুষের - আশাহীন স্বপ্ন
আশাহীন সুর - আশাহীন রোদ্দুর
আশাহীন পথচলা - আশাহীন নিরাশা!
সুখ বলতে - ঐ কিছু মৃদু তৃপ্তি -
ইলিশ মাছের ঝোল যেন -
বর্ষার বাঁধ ভাঙ্গা জল -
যখন একদল কিশোরকিশোরী -
মেতে উঠত জলকেলি খেলায় -
অদৃশ্য আনন্দে - অনাবিষ্কৃত শিশ্ন !-
আজ এই মাঝ বয়সের পরম প্রশান্তি!

২৩/১১/২০১৪

কি দারুন মাটির গন্ধ

- কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

অনেক হল
মানুষ হতে গিয়ে
মাটির গন্ধ শুকে, মানবিক উর্বরতায় কেটেছে যার শৈশব-
যে কিনা রঙের বৈষম্য শিখেছে আনমনে হরেক রকম কোমল পাতা ঘষে ঘষে
বালির বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে যে রপ্ত করেছে জোয়ারভাটার হিসেব নিকেশ
চলন্ত গাড়ীর ভেতর থেকে চাঁদ দেখে বুঝতে শিখেছে-
কেন চাঁদ স্থির থাকে যদিও- চাকা ঘুরছে অনবরত!
আরও কতকি? পৃথিবীটা গোল, মেঘ থেকে মানুষের অবয়ব-
খুঁজে এনে দ্বৈত জগত সৃষ্টি করা-
কিন্তু সবই জঞ্জালে গেলো যখন তাকে কোমল মণ্ডে পরিবর্তিত করা হল শিক্ষাদানের নামে-
তারপর হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাট, চারিদিকে অন্ধকার-
কোটি কোটি মণ্ডের মাঝে কিছুতো উচ্ছিষ্ট নোংরা হবেই-
মানুষ তৈরির কারখানায়, খামখেয়ালিপনায়!
এবার একটি প্রতিষ্ঠিত মণ্ড যে কিনা ধীরে ধীরে একজন সফল রোবটে রুপান্তরিত হল-
সে আমাকে শাসিয়ে গেলো কীরে মানুষ কেন হলিনা এই জনমে?
আমি তাকে উত্তর দিলেম- অনেক হল-
মানুষ(রোবট) হতে গিয়ে
যখন ব্যর্থ হলাম
তাই এখন কুকুর হয়ে বাকী জীবন পার করিয়ে দেবার সপ্ন
শক্ত জোড়া নাকের ওপর ভর করে শুধু শ্বাসপ্রশ্বাসে থাকবো
আর ঘ্রান নিবো
আহ্ কি দারুন মাটির গন্ধ!



২২শে সেপ্তেম্বের,২০১৩

woman in black long sleeve shirt and blue denim jeans sitting on white concrete wall
woman in black long sleeve shirt and blue denim jeans sitting on white concrete wall

মৃত্যু তুমি অনাগত কবিতার ভুমিকা

মৃত্যু তুমি উদযাপনের,
তুমি আনন্দের,
তুমি দুঃখ বিভ্রাট,
তুমি মৌনতার উল্লাস,
একটি কবিতার সমাপ্তি,
আলোর পথে উত্তরন,
আকাশী চিলের স্বপ্ন,
কঙ্কটবিহীন গোলাপের হাতছানি,
মৃত্যু তুমি পিয়ানোর 'প্রেলুড'
মৃত্যু তুমি অনাগত কবিতার ভুমিকা






কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ
১৬ই অক্টোবর, ২০১৩


কিছু মানুষ

কিছু মানুষ -বিনীত ভাবে অবিনীত

আর কিছু মানুষ -অবিনীত ভাবে বিনীত

তবে "বিনীত ভাবে অবিনীতরা-ই" চরম অহংকারী-

এবং বিখ্যাত হওয়ার বাসনায় হায়ানার মতই উদগ্রীব

ডিসেম্বর ৮, ২০১৪, কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

সভ্যতার অসভ্যতা দমনের প্রক্রিয়া

পৃথিবীতে এসেছিলাম নিরবতার গান শুনতে-

চড়ুই, টুনটুনির সুরের ঐকতানে যে পথে সোনালু ফুল ঝরে- টুপটাপ

সেখানেই হেঁটে যাবো চিরকাল-

কিন্তু বাধ সাধল সভ্যতা-

সে আমাকে শুধু তাড়িয়েই নিয়ে গেলো অসভ্যতার ভেতর-

উবিয়ে দিয়েছে আমাদের পূর্ব পুরুষের অস্তিত্ব

হ্যাঁ, মেনে নিতে আপত্তি নেই যে সভ্যতা অনেক কাজের

আবার এটাও বলতে হয়- অকাজেরও বটে!

তবে এটাও সত্য যে আমরাই আবার নিজেদের ছেঁকে নিতে পারি সভ্যতার প্যাচকল থেকে-

যদি প্রতিদিন সকালটা শুরু করি অতিপ্রাকৃত চেতনা দিয়ে-

আর সেভাবেই ইতি টানি প্রতিদিন

তাতে সভ্যতার ব্যাপারে যতোটা উৎসাহ বাড়বে-

আবার গণ্ডার তুল্য পুরু চামড়া জড়িয়ে ঠেঙ্গানোও যাবে সভ্যতার অসভ্যতাকে!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

১২ই নভেম্বর, ২০১৪

মানুষ হবার কৌশল

বিকট শব্দে কাছে কোথাও ট্রান্সফরমার বাস্ট!
আমি ভাবছি হয়তো একটি কাকের আত্তহুতি!
ব্যর্থ প্রেমিকের জীবনাবসান ঘটলো ট্রান্সফরমারে পা ঢুকিয়ে!
কিন্তু কাক মানুষ না-
তারা এতো জটিলও না-
তাদের জীবন জটিলতা হীন-
তারা পরিপূর্ণ!
অর্থাৎ একটি কাক = জন্মগত ভাবে একটি পরিপূর্ণ কাক,
কিন্তু মানুষ জন্মগত ভাবে পরিপূর্ণ নয়-
মানুষকে ভাবাবেগ উৎরিয়ে পরিপূর্ণ হতে হয়-
মানুষের ভাবাবেগ- জটিলতা থাকবেই, শুধু যখন প্রয়োজন পড়বে-
অর্থাৎ মোবাইল ফোনের মতন-
যখনই প্রয়োজন পড়বে শুধু তখনই মানুষ কথা বলবে, শুনবে-
এর বাইরে এক চিলতেও নয়!

কায়সার মোহাম্মাদ ইসলাম চিরহরিৎ

১০/১২/২০১৪

কবি তুমি পবিত্রতার প্রেতাত্মা

কবি তুমি পবিত্রতার প্রেতাত্মা
তুমি ঐশ্বরিক ইচ্ছের প্রতিফলন
সবুজ ঘাসের পাঠশালার প্রজাপতি
হেঁটে যাওয়া পথের অচেনা পথিক
আসন্ন বৃষ্টির সংকেত দাতা
অসময়ের গানের গীতিকার
অনাগত ধর্মের বার্তা বাহক
হতাশা থেকে মৌনতার পথে
যেখানে অসংখ্য সুখ-
ছড়িয়ে আছে আনাচে কানাচে-
কেউই জানেনা-
শুধু কবি জানে


কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ
১২ই ডিসেম্বর, ২০১৪

কবিতা দিয়ে বিশ্লেষণ

কবিতা দিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে আমাকে
শব্দ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে আমার প্রতিটা সেকেন্ড
লাইন দিয়ে ভাগ করতে হবে জীবনের প্রতিটা দশক
আত্মগ্লানি, অপরাধবোধ আর ব্যর্থতার আঠায় থেতো করে বানাবো
এক গ্লাস কবিতার রস
আত্মোপলব্ধি, অভিজ্ঞতা আর বিরত্তের নুড়ি দিয়ে বানাবো
এক বস্তা কবিতার সিমেন্ট
এবার শুধু রঙ মাখো কবিতার মুখে
গান শোনো পাতা ছড়িয়ে
এরপর হাওয়া এসে উপস্থিত
দর্শকরাও সব ফেরেস্তা
স্বর্গালোকে ঈশ্বর এসে
নিজেই কবিতা হলেন।



কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ
কাব্যগ্রন্থঃ চিরহরিৎ মানুষ(২০০২)


সিজার হয়ে বেঁচে ছিলাম

যতো বার দেখি আমি
ততো বার ভাবি
সিজারের জীবন যেন
নিজের প্রতিচ্ছবি,

ছাব্বিশ বার ছুড়ির আঘাত
শেষের তম ব্রুটাস-
হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারি
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস;

সিজার নিয়ে এতো ছবি
দেখি ভুরি ভুরি-
তবু কেন মনের নেশা
যায় নি এক কড়ি!

তাহলে কি পূর্ণজন্ম
সত্যি হোল এবার
সিজার হয়ে বেঁচে ছিলাম
দুনিয়াতে আরেকবার!


কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪

একটি বিকেল- রেস্তোরাঁ ও গনতন্ত্র

সবকিছু ছেড়ে হঠাৎ রেস্তোরাঁয় যেতে ইচ্ছে করে
বিশালকায় একটা রেস্তোরাঁর এক কোণে জানালায়
শহুরে সারমর্ম চোখে পড়ে সিলিং ফ্যানের ঝড়ো বাতাসে
লাল জামার বয়কে অর্ডার দেবো “এক কাপ চা”
ঘন দুধ মিশিয়ে স্পেশাল কিছু, নাহ আগে ঐ “শিক্ কাবাব”
তার গন্ধ বয়ে আসছে ধোঁয়ার ডানায় হোটেলের এক কোণে
তারপর রঙিন একটা খবরের কাগজে
রসালো সব খবর ফেলে সোজা খেলার পাতায়
“শচিন কতো রান করেছে কতো বলে”?
ইংল্যান্ডের অবস্থা এখন কেমন?
ওহ্ দুটো বিদেশী সিগ্রেট দাওতো”
খাওয়ার ঘ্রাণে হোটেলে ধোঁয়ার টানে কি যে সুখ
আচ্ছা আর্সেনাল কিভাবে জিতলো ইন্টারের সাথে?
জিদান এখন কোন্ ক্লাবে? কিংবা জামারানো?
কতো সুখের ছায়ায় ভাবি একটা রেস্তোরাঁর কথা
আসলে এর চেয়ে কি সুখ এই দেশে আছে?
নিগুঢ়তা ফেলে স্থুলতা এড়িয়ে একটু হালকা কিছু
ধরো রেস্তোরাঁটা একটা পৃথিবী
টেবিলগুলো একেকটা দেশ
বেয়ারাগুলো একেকটা পলিটিশিয়ান
আমি যে কোনো একটি দেশের প্রেসিডেন্ট
সিগ্রেটটি একটি “থ্রি টু পিস্তল”
আমি গুলি ছুঁড়ছি শূন্যে স্বাধীনভাবে
কেউ হতাহত হল না অথচ সবাই স্বাধীন।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

২০০১

দুঃখের ফসিল

এখন যদি কেউ আমায় নীল আকাশটাও ছুঁয়ে দেয়

তবুও শান্তি আসবেনা আমার হৃদয় গহিনে,

কারণ আমি যৌবনটা হারিয়েছি চোরাবালির ফাঁদে

আর সেই চোরাবালিতে এখনও লুকিয়ে আছে আমার-

দুঃখের ফসিল!

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম

ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪

মানিয়া

মানিয়া, আমি তোমার পোর্ট্রেট আঁকবো না,

তোমার নরম সুন্দর মুখশ্রী

আমার হৃদয়ের ব্যাথা হয়ে

ফিরে আসে একটি স্বপ্নে;

তুমি যেন অনেক আগের চেনা,

সেই এক হাজার বছর আগের;

যখন এদেশে কোন বিদেশী আসেনি

আমি ঘুরে বেড়াতাম বাঁশি হাতে বৃন্দাবনে-

তুমি খোলা শরীরে চুল এলিয়ে চাঁদ দেখতে...

ওসব ইতিহাস আর মনে আনতে চাইনা

আমি তোমার পোর্ট্রেট আঁকবো না

মানিয়া, তুমি এখন ক্লিওপেট্রা,

কেউ কিং সিজার- কেউবা ক্রীতদাস;

আর, আমি নির্জীব বেকার;

সবাই মেলে দিচ্ছে স্ব স্ব ক্ষমতা,

মৌনতা, উজাড় করছে পৌরুষ;

আমি ইজেল নিয়ে বসে আছি-

দিনরাত;

আঁকছি তোমার সুন্দর ঠোঁট-

প্রিয় চোখ, অস্পৃশ্য এক মুখ

কার্টিজ পেপারে নয়- পেন্সিলে নয়

হৃদয় থেকে হৃদয়ে;

কি হবে? ছবি এঁকে- বাস্তবতাহীন- অর্থহীন পোর্ট্রেট এঁকে?

মানিয়া, আমি শিল্পী হতে চাই না-

আমি প্রেমিক হতে চাই।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

কাব্যগ্রন্থঃ আকাশের স্টাফ নোটেশান(২০০০)

হাওয়া লতা

আমি হাওয়া লতা

লেন্দেনহীন এক মানুষ

লোকে বলে এ আমার

এক ধরনের অহংকার;

সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করার

এক ধরনের প্রক্রিয়া;

জানো আমি কতোটুকু সুখি

এই আবদ্ধ রুমে

ঐ আপরাইট পিয়ানোটা

আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দেয়-

আমার পরম সত্তায়,

এই, এই যে হাত রাখলাম,

একটা মাইনর ইম্প্রভাইজেশন,

তারপর আবার নতুন দিনের নতুন শুরু

প্রতিধ্বনিত হোক বারবার

কেঁপে উঠুক আবদ্ধ ঘর;

আমার কান আমার দর্শক;

ষোড়শ শতাব্দীর অপেরার শ্রোতা;

চোখদুটি ক্রুশে বিদ্ধ যীশুর,

ঐশ্বরিক ইচ্ছের দুটো হাত,

অন্ধকারে লুকানো আলো

আমার বেঁচে থাকার উৎস;

জাগো প্রাণ, জাগাও উৎস

টিকে থাকো,

ঐ পাথুরে দ্বীপের মতন।

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

কাব্যগ্রন্থঃ আকাশের স্টাফ নোটেশান(২০০০)

কবিতা মানে

কবিতা মানে একা একা কথা বলার শ্রুতলিপি

কবিতা মানে নিঃসঙ্গতার পরিণতি

কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ

ডিসেম্বর ২২, ২০১৪

যে পথ তুমি ফেলে এসেছো

যে পথ তুমি ফেলে এসেছো-
সময়ের সাথে,
স্মৃতির ভেতর রঙের ধারায়-
ধীরে, ধীরে,
বদলে গেলে অথচ এখনও দুঃখ করো-
ইতিহাস নিয়ে,
ভেবে দেখেছো কতো গভীর-
এই বিবর্তনের নদি!
কতোটা সার্বজনীন এই বিবর্তনের ধারা!
তাই তুমিও বিবর্তিত ধারার অংশ মাত্র-
অতিত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ-
এভাবে আবার অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ-
হলদে, সবুজ, নীল-
আবার হলদে, সবুজ, নীল-
এই গতিশীল চক্রই-
আমি, তুমি, সে


কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ
১৪ই অক্টোবর, ২০১৩

কবিতা আমার

কবিতা আমার ধোঁয়াটে স্মৃতি
অসীম ইচ্ছের মুগ্ধ কৈশোর
ঘাস থেকে ঘাসে উড়ে যে প্রজাপতি ক্লান্তিহীন
তারপর আরেক বসন্তে ঝরলো তার রঙ
কতো বসন্ত গেলো, কতো রঙ মিশলো আকাশে
তবুও ফিরলো না সেই ধূসর কৈশোর।




কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম চিরহরিৎ
কাব্যগ্রন্থঃ চিরহরিৎ মানুষ(২০০২)

Write your text here...